রংপুরের পীরগাছায় সুদের টাকার জন্য অসহায় এক বৃদ্ধ দম্পতি ও তার মেয়েকে বেদম মারপিট করার অভিযোগ উঠছে মানিক চন্দ্র নামে এক দাদন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এসময় শ্লীলতাহানী করা হয় এক নারীকে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত বৃদ্ধ দিনেশ চন্দ্র বর্মন ও তার স্ত্রী ঝুমবালা রানীকে পীরগাছা হাসপাতালে ভর্তি করেন। গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পূর্বদেবু গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসী কয়েক দফা বৈঠক করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই গ্রামের অসহায় বৃদ্ধ দিনেশ চন্দ্র বর্মনের মেয়ে উর্মিলা রানী অভাবে পড়ে ৪ বছর আগে প্রতিবেশি দাদন ব্যবসায়ী মানিক চন্দ্রের নিকট চড়া সুদে ১৫ হাজার টাকা নেয়। ৪ বছরে প্রায় লক্ষধিক টাকা লাভ দেওয়ার পর মাত্র ৫ হাজার টাকা বাকি রেখে এক মাস আগে আসল টাকাও ফেরত দেন উর্মিলা রানী। গত শুক্রবার বিকেলে লাভের ওই ৫ হাজার টাকা দাবি করেন দাদন ব্যবসায়ী মানিক চন্দ্র। এসময় পূজার পর টাকা দেওয়া হবে বলে জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে মানিক চন্দ্র অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার দুই ছেলে বিশ^জিৎ চন্দ্র ও বিকাশ চন্দ্রকে নিয়ে জনৈক দিলিপ চন্দ্রের মন্দির প্রাঙ্গনে উর্মিলা রানীর বাবা অসহায় বৃদ্ধ দিনেশ চন্দ্র বর্মন (৬৭) মা ঝুমবালা রানী (৫৫)কে বেদম মারপিট করেন। এসময় বাবা ও মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তাকে মারপিট ও শ্লীলতাহানী করা হয়। পরে এলাকাবাসী গুরুতর আহত বৃদ্ধ দম্পতিকে পীরগাছা হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিষয়টি গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে চরম উত্তেজনায় ফেঁটে পড়েন এলাকাবাসী।
আহত দম্পতির ছেলে ভিম চন্দ্র বলেন, আমার বাবা এক সময় নারিকেল গাছ পরিষ্কার করে সংসার চালাতো। এখন অসুস্থ্য অবস্থায় বাড়িতে থাকে। আমি আমার বাবা-মাকে মারপিটের বিচার চাই।
স্থানীয় এলাকাবাসী বাপ্পি চন্দ্র, শেফালী রানী বলেন, সামান্য সুদের টাকা নিয়ে ওই অসহায় দম্পতিকে যেভাবে মেরেছে, তা এলাকার কেউ মেনে নিতে পারছে না। আর যে ভাবে মানিক চন্দ্র অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা ওই দাদন ব্যবসায়ীর কঠিন বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে।