উলিপুরে গত কয়েক দিনে অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসে পাহাড়ী ঢলে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার নদীর পানি বেড়ে নদী অববাহিকা এলাকা গুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলের চাষাবাদ করা পাট, বাদাম, মরিচ ক্ষেত ও আমন বীজতলা। নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে যেন রাক্ষসী রুপ নিয়েছে তিস্তা।মহুর্তের মধ্যে গিলে খাচ্ছে একরের পর একর ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি। অনেকে ভিটামাটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সময় মত কাজ না করায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দায়ী করছে এলাকাবাসী । উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গার মেম্বার পাড়া, নগর পাড়া ও গোড়াই পিয়ার এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে এলাকাবাসী পাউবো সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। কিন্তু পাউবো কর্তৃপক্ষ ভাঙন রক্ষায় কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে গাছের ডালপালা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে তিস্তা নদীর অব্যাহত ভাঙনে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে,লাল মিয়া,চাদ মিয়া,ছকিনা,ছালাম,রবিয়াল,নগেন, পরেশ, জিতেন,মলিন,গোপাল, ধেরেনসহ ৩০ পরিবারের ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি নদী পেটে চলে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে, গোড়াই পিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোড়ই পিয়ার পিয়ারী দাখিল মাদরাসা,জামে মসজিদ, বাঁধের রাস্তা সহ শতশত ঘর-বাড়ি।
আজ বিকালে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
থেতরাই ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, বিগত ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতিহিংসার কারণে এলাকা ভাঙন রোধে কোন কাজ করা হয়নি। এদিকে বন্যায় চরাঞ্চলের বাড়ি গুলোতে পানি ওঠায় রান্না করতে না পারায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।থেতরাই ইউ পি সদস্য আব্দুল হালিম জানান গত দুদিনের ভাঙ্গনে আমার ওয়ার্ডের ১০/১৫টি পরিবার নদী ভাঙ্গনে ভিটামাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে।ভাঙ্গনে শিকার রাশেদা বেগম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন জানান,ভাঙ্গন ঠেকাতে যেন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।